বাংলাদেশ গ্রামপুলিশ বাহিনী কর্মচারী ইউনিয়ন রাষ্ট্রের অবিচ্ছেদ্য একটা অংশ এবং স্হানীয় সরকার মন্ত্রনালয়ের অধীনে ইউনিয়ন পরিষদে কর্মরত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ তৃণমূল পর্যায়ে গ্রামপুলিশ বাহিনী ভুমিকা রাখেন——————–+————————————————————————-+—————————————————–
দেশের সকল গণতান্ত্রিক আন্দোলন-সংগ্রামে মানুষের জান মালের নিরাপত্তা বিধানে প্রত্যক্ষ ভূমিকা পালন করে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্থিতিশীল রাখতে অন্যান্ন বাহিনীর পাশা পাশি গ্রামপুলিশ বাহিনী অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। এদেশের অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্থিতিশীল রাখায় বাংলাদেশ গ্রামপুলিশের অবদান অনস্বীকার্য। গ্রামের মানুষের জান-মাল এবং সম্পদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং কার্যকর ভূমিকা পালন করে আসছে গ্রামপুলিশ বাহিনী। সচেতন মহল অবশ্যই স্বীকার করবেন প্রায় শত বছর আগেও এদেশে শীর্ষ সন্ত্রাসীদের ভয়ে বিভিন্ন ব্যবসায়ীরা আতঙ্কিত ছিলেন, প্রতিনিয়ত চাঁদা দিতে হতো শীর্ষ সন্ত্রাসীদেরকে সেই সকল চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের দমনে সঠিক তথ্য দিয়েছেন এই বাংলাদেশ গ্রামপুলিশ বাহিনী।এদেশের অগ্রযাত্রার পিছনে সবচেয়ে বড় হুমকি হয়ে দাড়ায়- জঙ্গিগোষ্ঠীগুলো কিন্তু অত্যন্ত সফলতার সাথে বাংলাদেশ গ্রামপুলিশ বাহিনী এই জঙ্গিদেরকে নিয়ন্ত্রণে আনার ক্ষেত্রে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে বিভিন্ন ভাবে তথ্য উপাত্ত দিতে সক্ষম হয়েছে -অন্যথায় এ দেশ একটা ভঙ্গুর এবং জঙ্গিরাষ্ট্রে পরিণত হতো।
এক সময় গ্রামগঞ্জের হাট বাজারে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও স্বর্ণের দোকানে প্রায়ই সঙ্ঘবদ্ধ ডাকাতি হতো । সেই সমস্ত ডাকাতদেরকে নিয়ন্ত্রণ করে আজকে গৃহ ডাকাতি/ স্বর্ণের দোকানে ডাকাতি/ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ডাকাতি বন্ধ করার পিছনে কিন্তু বাংলাদেশ গ্রামপুলিশ বাহিনীর যথাযথ তথ্য ও সহযোগিতা অবিস্মরণীয়।
গ্রামে-গঞ্জের বাসা বাড়িতে প্রচুর চুরি বিগত দিনগুলোতে হতো, এখনো হয়, সুযোগ ফেলে সিঁদ কেটে সব কিছু নিয়ে লাপাত্তা, বাসা বাড়ি গুলোতে প্রচুর পরিমাণে চুরি হয় কিন্তু এদেরকে নিয়ন্ত্রণ, গ্রেপ্তারে সহযোগিতাও আইনি প্রক্রিয়ায় নিয়ে আসার জন্য বাংলাদেশ গ্রামপুলিশ বাহিনীই একমাত্র সঙ্ঘবদ্ধ দল, যাহারা এখনো মাঠে ময়দানে অর্ধাহারে অনাহারে স্বল্প বেতনে চাকর করে মানবেতর জীবনযাপন করে যাচ্ছে।এমনিভাবে হাজারো দৃষ্টান্ত তুলে ধরা যাবে যেখানে রয়েছে গ্রামপুলিশের ব্যাপক সফলতা আর সফলতা।
এখনো এদেশের মানুষ নিশ্চিন্তে চলাফেরা করেন ,নিশ্চিন্তে ঘুমান শুধুমাত্র বাংলাদেশ গ্রামপুলিশ বাহিনীর কারনে । কারণ বাংলাদেশ গ্রামপুলিশ বাহিনী আপনাকে পাহারা দেয় রাত জেগে । আপনি যখন ঘুমান সেই গ্রামপুলিশ কিন্তু আপনার বাড়ির নিরাপত্তা, আপনার জানের নিরাপত্তা এবং আপনার সম্পদের নিরাপত্তা দিয়ে থাকে।
দেশের যেকোনো দুর্যোগ দুর্বিপাকে সাধারণ মানুষের পাশে বাংলাদেশ গ্রামপুলিশ বাহিনী । সর্বশেষ এই করোনা কালীন সময়ে বাংলাদেশ গ্রামপুলিশ বাহিনী যে সাহস এবং মানবিকতা দেখিয়েছে তাহা সর্বমহলে প্রশংসনীয়।
রাস্ট্রের মধ্যে একমাত্র গ্রামপুলিশী সেবাই সবচেয়ে সহজলভ্য। বাংলাদেশ গ্রামপুলিশ বাহিনী যেভাবে তার কর্মপরিকল্পনাকে ঢেলে সাজিয়েছে এবং গ্রামপুলিশী সেবা যেভাবে জনগণের কাছে সহজতর করা হয়েছে, সহজলভ্য করা হয়েছে, জনগণের বাড়ি বাড়ি গিয়ে জন্ম মৃত্যু নিবন্ধনের মতো জনগুরুত্বপূর্ণ গ্রামপুলিশী সেবা পৌঁছে দেওয়া হয়েছে -এই রকম আর কোন বাহিনী স্বল্প বেতনে আছে বলে আমার মনে হয় না।
একজন সাধারণ মানুষ হিসেবে আমরা যখন অন্য কোন দপ্তরে কোন সেবা প্রত্যাশী হিসেবে যাই, এরকম সহজ সেবা আমরা আমাদের জীবনে কোথাও পাইনি, এখনো পাচ্ছিনা আর ভবিষ্যতেও খুব সহজে পাব বলে আমরা অতটা আশা করি না।
বাংলাদেশ গ্রামপুলিশ বাহিনীর সাধারন সম্পাদকের দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে গ্রামপুলিশ বাহিনীর ভিতরে থাকা আভ্যন্তরীণ কোন্দল মিটাতে নানামুখী, জনমুখী ও গণমুখী করার পদক্ষেপ হাতে নিয়েছি। সাম্প্রতিককালে সাথে সাথে বাংলাদেশকে মাদক মুক্ত করার জন্য বিভিন্ন বাহিনীর পাশাপাশি আমরা বাংলাদেশ গ্রামপুলিশ বাহিনী ও একটা চ্যালেঞ্জ হাতে নিয়েছি-সেই চ্যালেঞ্জে বাংলাদেশের সকল জেলা ও থানা গ্রামপুলিশদের সম্পৃক্ত করেছি।
পরিশেষে এটুকু বলতে চাই, বাংলাদেশ গ্রামপুলিশের প্রত্যেকটি সদস্য এই সমাজ থেকে উঠে আসা সাধারণ মানুষ। সমাজে এবং আপনার নিজ ঘরে যেরকম ভালো এবং খারাপ মানুষের সংমিশ্রণ আছে ,তেমনি ভাবে সরকারি- বেসরকারি প্রত্যেকটা জায়গায় ভালো এবং খারাপ মানুষও আছে । তেমনি ভাবে বাংলাদেশ গ্রামপুলিশ বাহিনীর ভিতরে ও ভালো- খারাপ থাকতে পারে সন্দেহের অবকাশ নেই। তাদেরকে সঠিক ভাবে রাস্ট্রর দেয়া অর্পিত দায়িত্ব যথাযথ ভাবে পালণ করার জন্য সাংগঠনিক ভাবে কঠোর হুশিয়ারি দেয়া হয়। রাস্ট্র হতে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজ,দুর্নীতিবাজ হঠানো যেমন সময়ের দাবি তেমনি ভাবে সমাজকে সঠিক পথে পরিচালিত করা, সমাজের মানুষকে সঠিকভাবে পরিচালিত করা এবং আগামী প্রজন্মকে দেশপ্রেমিক, সৎ এবং সুনাগরিক তৈরি করা অত্যন্ত জরুরি, তবেই দীর্ঘমেয়াদী পরিবর্তন আশা করা যায়।
সর্বশেষে বলি, মনে রাখবেন আজকে যে গ্রামপুলিশ রাস্ট্রের নিকট অবহেলিত সে আর কেউ নন সেই আপনার গ্রামের প্রকৃত বন্ধু, এই গ্রামপুলিশ আপনার দুর্দিনের সহযাত্রী, এই গ্রামপুলিশ আছে বলেই নির্বিঘ্নে রাতে বাসায় ঘুমাতে পারছেন।
ঈদ এবং বিভিন্ন পূজা পার্বণে আপনি যখন পরিবারের সাথে সুন্দর করে সময় কাটান, সেই সময় বাংলাদেশ গ্রামপুলিশের সদস্যরা নিজ পরিবারকে একা ঘুমিয়ে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে।
আমিও আপনাদের মতই একজন সাধারণ নাগরিক। গ্রামপুলিশরা আপনাদের থেকেই উঠে আসা আপনার সমাজের একজন নাগরিক। আসুন গ্রামপুলিশের হাতকে শক্তিশালী করুন, সঠিক তথ্য দিন, অন্যকে দোষারোপ করার আগে নিজের চেহারাটা একটু আয়নায় দেখে নিই তবেই সমাজে সত্যি কার অর্থে পরিবর্তন আসবে।
ধন্যবাদান্তেঃ- ফারুক আহমেদ ফালু যুগ্ন সাদারণ সম্পাদক কেন্দ্রীয় কমিটির ঢাকা ২৩/২/ তোপ খানা রোড সভাপতি গ্রাম পুলিশ বাহিনী কর্মচারী ইউনিয়ন সিলেট জেলা শাখা