ঢাকা,২২শে মার্চ, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ | ৮ই চৈত্র, ১৪২৯ বঙ্গাব্দ

মসজিদ নির্মাণ ও উহার গুরুত্ব : এম এইচ শাফী উদ্দী

received_3516669295068252.jpeg

 

মসজিদ নির্মাণ ও উহার আবাদ সর্ম্পকে পবিত্র কুরআনুল কারীমে মহান আল্লাহ্ তায়ালা বলেন!
إِنَّمَا يَعْمُرُ مَسَاجِدَ اللّهِ مَنْ آمَنَ بِاللّهِ وَالْيَوْمِ الآخِرِ وَأَقَامَ الصَّلاَةَ وَآتَى

الزَّكَاةَ وَلَمْ يَخْشَ إِلاَّ اللّهَ فَعَسَى

أُوْلَـئِكَ أَن يَكُونُواْ مِنَ الْمُهْتَدِينَ
অর্থাৎ নিশ্চয় আল্লাহর (ঘর) মসজিদসমূহকে আবাদ করে সেই ব্যক্তি, যে বিশ্বাস করে আল্লাহ্ ও পরকালে এবং নামাজ কায়েম করে ও যাকাত আদায় করে!'(সূরা তওবা, আয়াত-১৮)
মসজিদ’ শব্দের অর্থ সেজদা করার স্থান (আরবিতে : مسجد ) মসজিদ মুসলমানদের দলবদ্ধভাবে নামাজ পড়ার জন্য নির্মিত স্থাপনা!
শব্দটির উৎপত্তি আরবি মসজিদ.থেকে, যার আভিধানিক অর্থ শ্রদ্ধাভরে মাথা অবনত করা অর্থৎ সিজদাহ করা!
সাধারণভাবে, যেসব ইমারত বা স্থাপনায় মুসলমানরা একত্র হয়ে প্রাত্যহিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ (আরবি : صلاة সালাত) আদায় করেন, তাকে মসজিদ বলে! আবার যেসব বড় আকারের মসজিদগুলো নিয়মিত নামাজের সাথে সাথে শুক্রবারের জুম’আর নামাজ আদায় হয় এবং অন্যান্য ইসলামিক কার্যাবলী (যেমন : কোরআন শরীফ শিক্ষা দেওয়া) সম্পাদিত হয়, সেগুলো জামে মসজিদ (مسجد جامع) নামে অভিহিত

ইসলামের প্রাথমিক যুগে মসজিদের ভূমিকা : ইসলামের প্রাথমিক যুগে সমাজ পরিবর্তনে মসজিদের ভুমিকাই ছিল প্রধান!মসজিদ ছিল একই সাথে দাওয়াতী কাজের প্রাণকেন্দ্র এবং রাষ্ট্রীয় ভবন!
দাওয়াতী কার্যক্রম এখান থেকেই পরিচালনা করা হতো!বিভিন্ন বিষয়ের পরামর্শ ও সিদ্ধান্ত গ্রহণ এখানেই সম্পাদন করা হতো!
বিভিন্ন দেশ ও এলাকা থেকে আগত প্রতিনিধি ও মেহমানদের রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াছাল্লাম মসজিদেই স্বাগত জানাতেন.সাহাবায়ে কিরামের সাথে মসজিদেই তিনি মিলিত হতেন এবং তাদের শিক্ষাদান করতেন!
এক কথায় : মসজিদ ছিল তৎকালীন মুসলিম সমাজের যাবতীয় কাজের কেন্দ্রস্থল!

মসজিদ নির্মাণের সওয়াব সর্ম্পকে কিছু জেনে নিই-

হযরত ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত- যে ব্যক্তি আল্লাহর সন্তুষ্টির নিমিত্তে পাখির ডিম পাড়ার স্থান পরিমাণ মসজিদ নির্মাণ করবে আল্লাহ তার জন্য জান্নাতে একটি ঘর নির্মাণ করবেন! (আহমাদ, সহীহ)

হযরত ওসমান রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াছাল্লাম বলেছেন-

যে ব্যক্তি একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে একটি মসজিদ নির্মাণ করবে আল্লাহ্ তার জন্য বেহেশতে একটি ঘর নির্মাণ করবেন!

হযরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন- রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াছাল্লাম বলেছেন, বিভিন্ন স্থানসমূহের মধ্যে সর্বাপেক্ষা প্রিয় স্থান হলো আল্লাহর নিকট মসজিদসমূহ!

হযরত আয়েশা (রা.) বলেন- রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াছাল্লাম মহল্লায় মহল্লায় মসজিদ নির্মাণ করতে এবং মসজিদকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে ও উহাতে সুগন্ধি লাগাতে নির্দেশ দিয়েছেন!

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন- যে সকাল বিকেল মসজিদে যায়, প্রত্যেকবার যাতায়াতের বিনিময়ে জান্নাতে তার জন্য এক একটি ঠিকানা তৈরি করা হয়!

পৃথিবীর সর্বাপেক্ষা উত্তম স্থান মসজিদ। তাই মসজিদ আল্লাহর ঘর হিসেবে বিবেচিত.মসজিদে মুসলিমগণ দ্বীনের মূলভিত্তি সালাত দৈনিক পাঁচবার আদায় করে থাকে!
দ্বীনের মূলভিত্তি আদায়ের স্থান বিধায় দ্বীনের অন্যান্য কার্যাবলী সম্পাদনেও মসজিদের ভূমিকা প্রাসঙ্গিক ও অনস্বীকার্য!

এ ছাড়া মসজিদের পানে যারা যারা ছুটে যায় তাদের জন্য প্রতিটি কদমের বিনিময়ে উত্তম প্রতিদান, মর্যাদা ও গুনাহ মাফের ঘোষণা দিয়েছেন!

عن بريدة أن النبى -صلى الله عليه وسلم- قال من تطهر فى بيته ثم مضى الى بيت من بيوت الله يقضى فريضة من فرائض لله كانت خطواته إحداها تحط خطيئة والأخرى ترفع درجة. -أخرجه مسلم

হযরত বুরাইদা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, নিশ্চয় রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াছাল্লাম বলেন : যে ব্যক্তি তার বাড়িতে পবিত্রতা অর্জন করল অতঃপর ফরজ ইবাদত আদায়ের উদ্দেশ্যে আল্লাহর ঘরে (মসজিদে) গেল তার এক কদমের বিনিময়ে গুনাহ মার্জনা হবে এবং অপর কদমের বিনিময়ে মর্যদা বৃদ্ধি পাবে। শুধু তাই নয়; বরং মসজিদে যেতে অভ্যস্ত ব্যক্তিকে ইমানদার হিসেবে সাক্ষ্য দিতেও রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াছাল্লাম নির্দেশ দিয়েছেন!
যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের সন্তুষ্টে মসজিদ নির্মাণ করেছেন এবং করতেছেন সবার প্রতিবিপ্লবী শুভেচ্ছা!
আলহামদুলিল্লাহ সিলেট বিশ্বনাথ 2 নং খাজাঞ্চি বন্ধুয়া কেন্দ্রীয় মসজিদ নির্মাণ কাজ চলিতেছে দোতলা ছাদ ঢালাইয়ের কাজ সমাপ্ত হয়েছে বাকি কাজগুলো যেন দ্রুত সম্পন্ন হয় দেশবাসীর প্রতি দোয়ার আবেদন এবং আমার মহল্লাবাসীকে জানাই আন্তরিক মোবারকবাদ!
আসুন আমরা মসজিদ নির্মাণ করি নামাজ ও তেলাওয়াতে জিকিরের মাধ্যমে মসজিদ আবাদ করা চালু রাখি!
দুনিয়া ও আখেরাতের কল্যাণ অর্জন করি আল্লাহ আমরা সবাইকে মসজিদের সঙ্গে সম্পর্কিত রাখার তৌফিক দান করুন আমীন ইয়া রাব্বাল আলামীন!
লেখকঃ ইসলামিক গবেষক হাফেজ মাওলানা শাফী উদ্দীন ইমাম ও খতিব বন্ধুয়া কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ ২ নং খাজাঞ্চি ৭ নং ওয়ার্ড বিশ্বনাথ সিলেট!

Leave a Reply

Your email address will not be published.

scroll to top