আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ মানবাধিকার সংরক্ষণ পরিষদের উদ্যোগে ১০ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার দুপুরে সিলেট নগরীর কোর্ট পয়েন্টে বিশাল মানববন্ধন কর্মসূচিত পালিত হয়।
বাংলাদেশ মানবাধিকার সংরক্ষণ পরিষদের সভাপতি প্রিন্সিপাল মাওলানা শায়খ মাহমুদুল হাসানের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মাওলানা শিব্বির আলম খানের পরিচালনায় মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন শায়খূল হাদীস মাওলানা আব্দুল মতিন ধনপুরী, সিলেট বিভাগ গণকল্যাণ ট্রাস্টের চেয়ারম্যান মাওলানা আব্দুল মালিক চৌধুরী, মাওলানা গাজী রহমতুল্লাহ, মাওলানা আবু বকর সিদ্দিক সরকার, মাওলানা সুহেল আহমদ, প্রফেসর আব্দুল্লাহ আল হেলাল, প্রভাষক আমিনুল ইসলাম, মানবাধিকার কর্মী বুরহান উদ্দিন, মাওলানা রুহুল আমিন, শাহ কামরুজ্জামান শিহাবুর রহমান প্রমুখ।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, মানুষ পৃথিবীতে তার অধিকার নিয়ে আগমন করে কিন্তু বিশ্বের বিভিন্ন দেশের শাসকগোষ্ঠীর স্বৈরাচারী মনোভাবের কারণে মানবাধিকার মারাত্মকভাবে লঙ্ঘিত হয়। চীনের উইঘুর প্রদেশ, পাকিস্তানের বেলুচিস্তান এবং ইরাক, ইরান, সিরিয়া, আফগানিস্তান, বার্মা সহ বিশ্বের বিভিন্ন রাষ্ট্রে আশঙ্কাজনক ভাবে মানবাধিকার ব্যাহত হচ্ছে।
বক্তারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, চীনের উইঘুর মুসলমান পুরুষরা প্রায় অর্ধ শতাব্দী কাল থেকে নামাজ পড়তে পারেনা, মহিলারা হিজাব ব্যবহার করতে পারে না। শিশুরা তাদের মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। মায়ানমারে চরমভাবে মানবাধিকার লংঘন হচ্ছে। জাতিসংঘ ও ও.আই.সি সহ বিশ্বসংস্থাগুলো কে মানবাধিকার লঙ্ঘনকারী দেশ সমূহের বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা সময়ের অপরিহার্য দাবি। অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা, চিকিৎসা মানুষের মৌলিক অধিকার। এ সকল অধিকার থেকে মানবজাতিকে যারা বঞ্চিত করে তারা পৃথিবীতে জালিম ও স্বৈরাচার হিসেবে চিহ্নিত হয়ে থাকবে। প্রতিটি সন্তানের অধিকার নিয়ে বেঁচে থাকার নামই হচ্ছে মানবাধিকার বাস্তবায়ন।
বক্তারা বলেন, ইসলাম মানুষকে মানবতার ধর্ম কি? তা শিক্ষা দেয়। বিশ্বের মোড়ল শ্রেণীর মানবাধিকারের শ্লোগানধারী ফেরিওয়ালাদের মধ্যে সত্যিকারের মানব প্রেম খুঁজে পাওয়া যায় না। বিভিন্ন যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশে লঙ্ঘিত মানবাধিকারের নমুনা দেখলে গা শিউরে উঠে। বক্তাগণ ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকলের মানবাধিকার রক্ষায় বিশ্ব নেতৃবৃন্দকে এগিয়ে আসার উদাত্ত আহ্বান জানিয়ে বলেন, চীনের উইঘুর প্রদেশের মুসলমানদের উপর যে নির্মম নির্যাতনের স্টিম রোলার চলছে তা দেখার কি কেউ নেই? বিশ্ব বিবেক কি ঘুমিয়ে পড়েছে? পাকিস্তানের বেলুচিস্তানে একই ধরনের ভয়াবহ চিত্র। আন্তর্জাতিক ফোরামে আলোচনা করে জাতিসংঘের মাধ্যমে ব্যবস্থা গ্রহণ করা সময়ের অপরিহার্য দাবি।
বক্তারা বলেন, বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় প্রথমেই বিশ্ব মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে। সাথে সাথে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে সকল শ্রেণী-পেশার মানুষকে রুখে দাঁড়াতে হবে। বক্তারা সাম্য ভ্রাতৃত্ব ও অহিংস আন্দোলনের মাধ্যমে সকলকে এগিয়ে আহবান জানান।