মির আহম্মদ ছিলেন মুক্তির সংগ্রামে একজন সাহসী যোদ্ধা একাত্তরের উত্তাল দিনগুলোতে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর নির্যাতন যখন বেড়ে যায়, তখন টগবগে ২৫ বছরের এই তরুণ ছুটে যান রণাঙ্গনে, হাতে তুলে নেন অস্ত্র প্রশিক্ষণ নেন গেরিলা বাহিনীতে
জীবন বাজি রেখে যোদ্ধ করেন স্বাধীনতার জন্য। আমরা পেয়েছি স্বাধীন দেশ, একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশ পেয়েছে বিশ্ব দরবারে স্বীকৃতি কিন্তু স্বাধীনতার স্বাদ গ্রহণের ৫০ বছর পেরিয়ে গেলেও এখনো মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির স্বাদ পাননি এই মুক্তিযোদ্ধা
বর্তমানে ৭৫ বছর বয়সের ভারে ন্যুয়ে পড়া মির আহম্মদ,বিশ্বাস করেন তার প্রিয় নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যাই তাকে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির পাশাপাশি লাল-সবুজের পতাকায় মিশে থাকার সম্মানটুকো দিবেন
মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় নাম না ওঠা মির আহম্মদ তিনি থাকেন চাঁদপুর,জেলার শাহরাস্তি উপজেলার টামটা উত্তর ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডে বাসা হোল্ডিং-আবু মেম্বার বাড়ী গ্রাম পরানপুর ডাকঘর-আশ্রাফপুর,(৩৬৩২)তিনি মৃত ছবর আলীর ছেলে।
স্বাধীনতার ৫০ বছর হয়ে ও রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি আর মুক্তিযোদ্ধাদের নামের তালিকায় তার নাম না থাকায় হতাশা কাটছেনা তার বুকের ভিতর জমেছে দীর্ঘদিনের বঞ্চনার আহাজারি আক্ষেপ আর ক্ষোভ
১৯৭১সালে যুদ্ধকালীন সময়ের স্মৃতিময় দিনগুলোর কথা বলতে গিয়ে অশ্রু“সিক্ত হয়ে পড়েন মুক্তিযোদ্ধা মির আহম্মদ তিনি জানান দেশ স্বাধীন করতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে সাড়া দিয়ে মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিতে বাড়ির মায়া ছেড়ে যোগ দেন গেরিলা বাহিনীতে
ভারতের আসাম প্রদেশের গৌহাটি,খোয়াই ক্যাম্পে.২নং সেক্টর কমান্ডার মরহুম মখবুল হোসেন,এর অধীনে প্রশিক্ষণ নিয়ে যুদ্ধে অংশ নেন এসময় তার সঙ্গে থাকা ফজলুর রহমান,আমিন মিয়া আব্দুল হালিম,আব্দুল হাই,সহ বেশ কয়েকজন সহযোদ্ধা ছিলেন
তিনি আক্ষেপ করে বলেন দেশ মাতৃকার প্রয়োজনে পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছি কখনো বাড়ি ফিরে আসতে পারব এমনটা ভাবিনি দেশ স্বাধীন করেছি স্থানীয়রা মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে চিনলেও রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি সম্মান কিছুই পাইনি কিন্তু স্বাধীনতার ৫০ বছরেও ভাগ্যে জোটেনি কোনো স্বীকৃতি
মুক্তিযোদ্ধার ভাতা পাওয়া তো দূরের কথা, বিজয় দিবস ও স্বাধীনতা দিবসের কোনো অনুষ্ঠানে তাকে আমন্ত্রণ জানানো হয় না বলে জানান অকুতোভয় এই যোদ্ধা তাহলে শেষ জীবনেও কি তার ভাগ্যে জুটবে না কোনো স্বীকৃতি? তিনি কি বঞ্চিতই থেকে যাবেন?
এ বিষয়ে শাহরাস্তি উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার বলেন,মোঃ শাহজাহান পাটোয়ারী বলেন প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা হয়েও রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি না পাওয়ার বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক বিষয়টি নিয়ে লিখিত অভিযোগ করলে আমরা এ ব্যাপারে দ্রুত ব্যবস্থা নেব তাঁকে সহযোগিতা করবো।
এবং টামটা উত্তর ইউনিয়ন মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আব্দুল কুদ্দুছ বলেন আমরা মুক্তিযুদ্ধে যাইনি নিজের স্বার্থের জন্য ১৯৭১সালে জীবন বাজি রেখে এগিয়ে।গেছি পিচপা হইনি রণাঙ্গনের
সৈনিক হয়ে আশা করি বর্তমান সরকার সম্মান দিয়েছেন সকল সুযোগ সুবিধা প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধারা ভোগ করছেন তথ্যপ্রমাণাদি দিয়ে মির আহম্মদ ও একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তালিকায় আওতাভূক্ত হবেন আশা করি।